বাংলাদেশের সামরিক শক্তি ২০২২ | Bangladesh’s military strength
আমরা ২০২১ সালকে বিদায় করে ২০২২ সাল শুরু করেছি , পরিবর্তন হয়েছে সবকিছুতে ,সেই সাথে পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশ এর সামরিক শক্তি ও , Jobs Today BD এর আজকের আয়োজনে আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশের সামরিক শক্তি ২০২২ সালে কেমন পর্যায়ে আছে?
২০২২ সালের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের আপডেট তথ্য অনুযায়ী , বিশ্বের ১৪০ টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৪৬ , এবছর বাংলাদেশ ১ ধাপ পিছিয়েছে , গত বছরে বাংলাদেশ ৪৫ নম্বরে ছিল ।
****একটি দেশের শসস্ত্র বাহিনী স্থল, নৌ এবং আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত হয় ধাপে ধাপে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটা বাহিনীর সামরিক সক্ষমতা তুলে ধরছি ।
বাংলাদেশ LAND FORCE বা স্থলবাহিনী ,
২০২২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৪০ টি দেশের তালিকায় ৪৬ নম্বরে রয়েছে , কিন্ত ২০২১ সালে ৩০ নম্বরে ছিল , এক ধাপে এত অবনতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই নেই ,কারন গ্লোবাল ফায়ার সেনাবাহিনীর র্যাংক প্রকাশ করে থাকে সেই দেশের ট্যাংক সংখার বিবেচনায় , বিশ্বের সের এই সামরিক র্যাংকিং প্রকাশকারী ওয়েবসাইটের এমন তালিকা প্রকাশ নিয়ে আমরা একটু অবাক হয়েছি , কারন গতবছর গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার বাংলাদেশের ট্যাংকের সংখ্যা ৬২০ টি দেখিয়েছিল , কিন্ত এ বছর ৩২০ টি দেখিয়েছে , গত বছর ওয়েবসাইট গুলোতে ৩২০ টি দেখিয়েছিল , চীনের কাছে অর্ডার করা ৪৪টী vt-5 সহ , যদিও বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশ সেগুলো ডেলিভারি পেয়েছে , বাকি ৩০০ টি ট্যাংক নিয়ে গতবছর থেকেই আমরা ধোয়াশা প্রকাশ করেছি , তবে আমরা এতটুকু বলতে পারি বাকি ৩০০ টী ট্যাংক বাংলাদেশের কাছে গোপনে থাকার সম্ভাবনা বেশি , আর থাকুক না থাকুক , এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা আছে নিশ্চিত তারপরেও আমাদের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার এর উপরেই আস্থা রাখতে হবে ।
আসুন এবার আমরা অন্যান্য বিষয়সমুহ জেনে নিই ,
২০২২ সালে বাংলাদেশের কাছে আর্মড ফাইটিং ফেহিকল রয়েছে সাড়ে আটশটির মতো , যেখানে ২০২২ সালে ২০০০ টি দেখিয়েছিল গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ,
সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি রয়েছে ৩০ টির বেশি যেখানে ২০২১ সালে ৫৪ টি দেখিয়েছিল জিএফবি ,
টাওয়েড আর্টিলারি রয়েছে ৩৭১ টি , যেখানে গতবছর জিএফবি ৪৮৬ টি দেখিয়েছিল ,
তবে ৪০০ টির মতোই হবে ,
রকেট প্রজেক্টরস রয়েছে ৬৯ টি , তবে আমাদের মতে ৬৭ টি রয়েছে , এর মধ্যে trg-300 রয়েছে ১৮ ইউনিট ,
এছাড়াও Armoured recovery vehicle রয়েছে ২০ টির মতো ,
এবং Bomb disposal equipment রয়েছে ১ টি ,
শত্রু পক্ষের ট্যাংক দ্ধংশ করার জন্য নতুন পুরাতন মিলিয়ে মোট এন্টি ট্যাংক ওয়েপন্স রয়েছে ২০০ টির বেশি , যা বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট নয় ,
এবং অন্যান্য মর্টার অস্ত্র রয়েছে সাড়ে ৫শ টির মতো ,
এভিয়েশন হিসেবে সেনাবাহিনীর রয়েছে , ১ টি Airbus C-295W transport aircraft ,
এছাড়া আরো একটী Utility aircraft রয়েছে , (Cessna 208B Grand Caravan)
৪ টি ব্যাসিক ট্রেইনার এয়ারক্রাফট রয়েছে , (DA40NG)
আরো ৫ টি লাইট ট্রেইনার এয়ারক্রাফট রয়েছে (Cessna 152 Aerobat)
ছোটখাটো আক্রমনে সক্ষম স্বসস্ত্র স্বজ্জিত ৫ টি রাশিয়ার অত্যাধুনিক (Mi-171Sh) রয়েছে ,
এছাড়াও মোট ৫ টি ইউলিটি বা বেসামরিক হেলিকপ্টার রয়েছে ৫ টি ,
২ টি ফ্রান্সের (Eurocopter AS365 Dauphin)
এবং আরো ৩ টি আমেরিকার (Bell 206)
এছাড়াও সামরিক সরঞ্জাম সহ সেনা পরিবহন কিংবা রেসকিউ এর জন্য ৪ টি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ রয়েছে সেনাবাহিনীর , (Type 074 class: BS Jahangir)
এবং আরো ১৬৫ টি স্পিড বোট রয়েছে সেনাবাহিনীর ,
{(Metal Shark Boat)
(Sea Horse-13) (Kingfisher-29) (MFG-23C)}
এই ছিল সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র এবার আনুসাংগিক কিছু বিষয় ,
২০২২ সালে বাংলাদেশের সামরিক বাজেট 3.8 বিলিয়ন মার্কিন ডলার , যা ২০২২ সালে 4,2 বিলয়নে ছিল , এ বছর না বেড়ে আরো কমেছে , বাংলাদেশের সামরিক বাজেট সত্তিই অনেক হতাশাজনক , যেখানে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নত দেশ কোনোরকম চাপ ছাড়াই অন্তত ৮-১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট রাখতে সক্ষম সেখানে বাংলাদেশ মাত্র 3.8 বিলিয়ন মার্কিন ডলার সামরিক বাজেট রেখেছে , আমাদের চাওয়া বাংলাদেশ সরকার ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি করেব সেনাবাহিনীর সামরিক বাজেট ,
২০২২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈন্য সংখ্যা রয়েছে ১৬৫ লাখ , যেখানে ২০২১ সালে জি এফ বি ২ লাখ ৪ হাজার দেখিয়েছিল , তবে ২০২২ সালের সংখ্যাটাই ঠিক হবে ,
বাংলাদেশের কোন রিজার্ভ ফোর্স নেই ,
তবে ৬৮ লাখের বিশাল এক প্যারামিলিটারি ফোর্স বা আধা সামরিক বাহিনী রয়েছে বাংলাদেশের যা বিশের ১ নম্বরে রয়েছে প্রতিবারের মতই , আমরা আমাদের চ্যানেলে এই প্যারিমিলিটারি বাহিনী নিয়ে বিস্তারিতভাবে ভিডীও দিয়েছি আপনি চাইলে দেখে নিতে পারেন , এই ছিল এক নজরে বাংলাদেশ স্থলবাহিনীর সামরিক শক্তি ।
এবার আমরা আলোচনা করব ।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সামরিক শক্তি নিয়ে
২০২২ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী র্যাংকিং এ ১৪০ টি দেশের তালিকায় ৩১ নম্বরে রয়েছে , যেখানে ২০২১ সালে ২৪ নম্বরে ছিল , পিছিয়ে যাওয়ার কারন , বাংলাদেশ সেভাবে কোনোকিছু বাড়াইও নি আবার কমাইও নি , অপরদিকে অন্যান্য দেশ তাদের নৌবাহিনীতে গতবছর অনেক কিছু সংযুক্ত করেছে , সামরিক দুনিয়াই যদি আপনি নিজেকে সমৃদ্ধ না করে স্থির থাকেন , তাহলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন , তাই আপনি যদি সামরিক দুনিয়াই টিকে থাকতে চান তাহলে আপনার নিজেকে সমৃদ্ধ এবং উন্নত করতেই হবে ,
যাই হোক , ২০২২ সালে বাংলাদেশের নৌবাহিনীতে সাবমেরিনসহ সামরিক কাজে নিয়োজিত মোট নৌযান রয়েছে ১১২ টি। গতবছর ও ১১২ টিও ছিল ,
গত বছরের ন্যায় এ বছর ও বাংলাদেশের সাবমেরিন রয়েছে ২ টি , ফ্রিগেট রয়েছে ৭ টি এবং কর্ভেট রয়েছে ৬ টি , পেট্রোল ভেসেলস রয়েছে ৩০ টি ,
শত্রু পক্ষের যুদ্ধজাহাজ ধংশ করার জন্য মাইন ওয়ারফেয়ার রয়েছে ৫ টি ,
এছাড়াও অন্যান্য কিছু ছোট খাটো বোট এবং জাহাজ রয়েছে , যেগুলো আমরা একদিন বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব , সেজন্য আমাদের চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখতে ভুলবেন না ,
চলুন এবার আমরা সবশেষে কিছু তথ্য জেনে নিই,
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সামরিক শক্তি সম্পর্কে
২০২২ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ১৪০ টি দেশের তালিকায় ৫১ নম্বরে রয়েছে , গতবছর ছিল ৫৩ নম্বরে , গত বছরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে কিছু ট্রেইনিং বিমান ছাড়া তেমন কিছুই যুক্ত হয়নি । বরাবরের মতোই বাংলাদেশ প্রধান যুদ্ধবিমান রয়েছে ৪৪ টি , তার মধ্যে ৩৬ টিই হলো ৭০ এর দশকের প্রযুক্তির Chengdu f-7 আর মাত্র ৮ টি রয়েছে ৮০র দশকের প্রযুক্তির চর্থ প্রজন্মের মিগ-২৯ , দুক্ষজনকভাবে আজ ৫ বছর ধরে বাংলাদেশের MRCA বা মাল্টিরোল-কম্বাট-এয়ারক্রাফট প্রজেক্ট ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে , অথচ আমাদের বাংলার আকাশ রয়েছে শত্রুর আক্রমন ঝুকিতে , যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী শত্রু দেশ গুলো উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ব্যাবহার করছে , সেখানে আমরা সেই ৭০ আর ৮০র দশকের বিমান নিয়ে পড়ে আছি , বাংলাদেশ আকাশ রাখিব মুক্ত , বিমানবাহিনীর এই স্লোগান যেন আজ ফাকা আওয়াজে পরিনত হয়েছে, এনি ওয়ে্ বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষন বিমান রয়েছে ৬৩ টি , আরো কিছু অর্ডারে রয়েছে ,
প্রশিক্ষন বিমান রয়েছে ১৩ টি ,
বাংলাদেশের কাছে কোনো Dedicated Attack Aircraftনেই , নেই কোনো এটাক হেলকপটার , তবে সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ৮ টি এটাক হেলিকপ্টার অর্ডার করা হয়েছে , যেগুলো সার্ভিসে আসতে কয়েকবছর সময় লাগবেই , এটাক হেলিকপ্টার না থাকলেও ৬৬ টি সাধারন হেলিকপ্তার রয়েছে , যেগুলোর সবিই ইউটিলিটি হেলিকপ্টার , যা ব্যবহৃত হয় পরিবহন , এবং উদ্ধার কাজে , যুদ্ধের মদানে শুধুমাত্র নিরাপদ জোনে কিছু সরঞ্জাম এবং সৈন্য ডেলিভারি দিতে পারবে এগুলো , তাছাড়া সামান্য ঝুকিপুর্ন স্থানেও যাওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই এগুলোর ,
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অবস্থা খুবই করুন , আশা করি খুব দ্রুতই বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একটি শক্তিশালী পজিশনে যেতে পারবে ,
বাংলাদেশ এর সামরিক শক্তিতে আপনি কতটুকু সন্তষ্টু ? কিংবা বাংলাদেশ এর সামরিক শক্তি কি চাহিদা অনুসারে যথেষ্ট ? অথবা বাংলাদেশের কোন কোন সামরিক অস্ত্র কেনা প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন , আপনার মুল্যবান মতামট টি অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।